নেতার ডাকের অপেক্ষায় না থেকে রাজপথে নেমে পড়তে হবে

নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর বিএনপির ৩০০ প্রার্থীকেই দলের পক্ষ থেকে ডেকে হারার কারণ জানতে না চাওয়ায় বিএনপির কড়া সমালোচনা করেছেন দলটির ভাইস-চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। বিষ্ময় কণ্ঠে বললেন, ‘কি ধরনের দল করি আমরা!’

মেজর হাফিজ বলেন, ‘বিএনপির কর্মীরা অনেক নির্যাতিত। বিএনপির মহিলা কর্মীদেরকে পর্যন্ত নির্যাতন করা হয়। আমি নিজে প্রার্থী ছিলাম, গত নির্বাচনে ঘর থেকে বের হতে পারেনি। নিজের ভোটটা পর্যন্ত দিতে পারিনি। দুইদিন অবরুদ্ধ ছিলাম। কই, নির্বাচনের পর তো আমাদের কেউ জিজ্ঞাসা করে নাই। দল তো ৩০০ প্রার্থীকে ডেকে জিজ্ঞেস করে নাই যে, ‘কি হয়েছিল তোমাদের সাথে?’ কি ধরনের দল করি আমরা! সুতরাং আজকে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নেতার ডাকের অপেক্ষায় না থেকে রাজপথে নেমে এই জালিম সরকারকে বিদায় করতে হবে। তাহলে এই দেশ ১৯৭১ সালের মতো ফিরে পাবে নিজের মর্যাদা।’

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত ‘বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং স্বাধীনতার ৪৯ বছর প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এই বিস্ময় প্রকাশ করেন।

আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘জেএসডি বিএনপির তুলনায় অনেক ছোট দল। তারা যে কাউন্সিল মিটিংটা করেছে— ইমপ্রেস ইট, এটা আমার সোজা কথা। তারা যদি করতে পারে, বিএনপি কি আজকে ইমারজেন্সি করতে পারে না? সে জন্য বলছি, তারেক নিশ্চয়ই তুমি একদিন আমাদের প্রধানমন্ত্রী হবা। তবে তুমি হতে চাও কিনা, চাটুকারদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকলে কোনদিনও সম্ভব না। চাটুকারিতা ভাল লাগলেও, তবে সাবধান থাকতে হয়। আজকে দূরে থেকে এখানকার আন্দোলন করা সম্ভব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে না হয় বিএনপির ১ লাখ লোক জামিনে আছে। তাদেরকে ডাক দেন, তারা দুই দিনের জন্য হাইকোর্টের সামনের প্রাঙ্গণে এসে বসে থাকুক। এর মধ্যে খোদার তত্ব তো নড়ে যাবে, আর হাসিনা তো উড়ে যাবে।’

নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আজকের দিনে আমাদের প্রত্যাশা হলো— যদি বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে চাই, রাজবন্দিদের মুক্তি চাই, মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্র সবকিছুর অবসান চাই, দেশের গণতন্ত্র চাই, সংসদ বাতিল চাই, সরকারের পদত্যাগ চাই, নতুন নির্বাচন চাই তাহলে আন্দোলন এখন থেকেই ধারাবাহিকভাবে শুরু করতে হবে। এবং এই আন্দোলনকে সমগ্র জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে। যদি কালকে না পারি, তাহলে পরশু পারব। পরশুদিন না পারলে, তিনদিন পরে পারব। তিনদিন পরে না, পারলে ৩০ দিন পরে পারব। কিন্তু আমাদের পারতেই হবে। কারণ, আমাদের অস্তিত্বের জন্যই এই লড়াই।’

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত সহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন